হযরত শোয়াইব (আঃ) এর জীবনী (পর্ব-২)
হযরত শোয়াইব (আঃ) এর নিঃস্বার্থ ও আন্তরিকতাপূর্ণ দাওয়াত তাঁর কওমের লোকদের হ্রদয়ে রেখাপাত করল না। তারা বরং আরো বিক্ষিপ্ত ও উচ্ছ্রংখল হয়ে তাঁর সুললিত বয়ান ও অপূর্ব চিত্তহারী বাগ্মীতার জবাবে পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত কওমের নেতাদের মত নবিকে প্রত্যাখ্যান করল এবং ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও তাচ্ছিল্য করে বলল, 'তোমার সালাত কি তোমাকে একথা শিখায় যে, আমরা আমাদের ঐসব উপাস্যের পূজা ছেড়ে দেই, আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগ যুগ ধরে যাদের পূজা করে আসছে? আর আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত আমরা যা কিছু করে থাকি, তা পরিত্যাগ করি? তুমি তো একজন সহনশীল ও সৎ ব্যাক্তি' (সূরা-হুদ, আয়াত-৮৭)। অর্থ্যাৎ তুমি একজন জ্ঞানী ব্যাক্তি হয়ে একথা কিভাবে বলতে পার যে, আমরা আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে চলে আসা দেব-দেবীর পূজা পরিত্যাগ করি এবং আমাদের আয়-উপার্জনে ও রুজি-রোযগারে ইচ্ছামত চলা ছেড়ে দিই। আয়-ব্যয়ে কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম তা তোমার কাছ থেকে জেনে নিয়ে কাজ করতে হবে এটা কি কখনো সম্ভব হতে পারে? তাদের ধারনা মতে তাদের সকল কাজ চোখ বুজে সমর্থন করা ও তাতে বরকতের জন্য দোয়া করাই হ'ল সৎ ও ভাল মানুষদের কাজ।
শোয়াইব (আঃ) অধিকাংশ সময় ছালাত ও ইবাদতে নিমগ্ন থাকতেন বলে তাকে বিদ্রূপ করে কোন কোন মূর্খ নেতা এরুপ কথাও বলে ফেলে যে, তোমার ছালাত কি তোমাকে এসব আবোল-তাবোল কথা-বার্তা শিক্ষা দিচ্ছে?
কওমের লোকদের এসব বিদ্রুপবান ও রুঢ় মন্তব্য সমূহে বিচলিত না হয়ে অতীব ধৈর্য্য ও দরদের সাথে তিনি তাদের সম্বোধন করে বললেন,--
'হে আমার জাতি! তোমরা কি মনে কর, আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হ'তে সুস্পষ্ট দলীলের উপরে কায়েম থাকি, আর তিনি যদি নিজের তরফ থেকে আমাকে (দ্বীনি ও দুনিয়াবি) উত্তম রিযিক দান করে থাকেন, (তবে আমি কি তাঁর হুকুম অমান্য করতে পারি?)। আর আমি চাই না যে, আমি তোমাদেরকে যে বিষয়ে নিষেধ করি, পরে নিজেই সে কাজে লিপ্ত হই। আমি আমার সাধ্যমত তোমাদের সংশোধন চাই মাত্র। আর আমার কোন ক্ষমতা নেই আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত। আমি তাঁর উপরেই নির্ভর করি এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাই '(৮৮)। 'হে আমার জাতি! আমার প্রতি হঠকারিতা করে তোমরা নিজেদের উপরে নূহ্, হূদ বা সালেহ্ - এর কওমের মত আযাব ডেকে এনো না। আর লূতের কওমের ঘটনা তো তোমাদের থেকে দূরে নয়'(৮৯)।'তোমরা তোমাদের প্রভূর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাঁর দিকেই ফিরে এস। নিশ্চয়ই আমার পালনকর্তা অতীব দয়ালু ও প্রেমময়' (৯০)। 'তারা বলল, হে শোয়াইব! তোমার অত শত কথা আমরা বুঝি না। তোমাকে তো আমাদের মধ্যকার একজন দূর্বল ব্যক্তি বলে আমরা মনে করি। যদি তোমার জাতি-গোষ্ঠীর লোকের না থাকত, তাহ'লে এতদিন আমরা তোমাকে পাথর মেরে চূর্ণ করে ফেলতাম। তুমি আমাদের উপরে মোটেই প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তি নও'(৯১)। 'শোয়াইব বলল, হে আমার কওম! আমার জ্ঞাতি-গোষ্ঠী কি তোমাদের নিকটে আল্লাহর চেয়ে অধিক ক্ষমতাশীল? অথচ তোমরা তাঁকে পরিত্যাগ করে পিছনে ফেলে রেখেছ? মনে রেখ তোমাদের সকল কার্যকলাপ আমার পালনকর্তার আয়ত্তাধীন'(৯২)। 'অতএব হে আমার জাতি! তোমরা তোমাদের স্থানে কাজ কর, আমিও কাজ করে যাই। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে কার উপরে লজ্জাষ্কর আযাব নেমে আসে, আর কে মিথ্যাবাদী। তোমরা অপেক্ষায় থাক, আমিও অপেক্ষায় রইলাম' (হূদ-৮৮-৯৩)।
এর জবাবে তারা বলল যে, 'হে শোয়াইব! আমরা অবশ্যই তোমাকে ও তোমার সাথি ঈমানদারগনকে শহর থেকে বের করে দিব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করবে'(আ'রাফ- ৮৮)।
তারা আরও বলল, 'নিঃসন্দেহে তুমি জাদুগ্রস্তদের অন্যতম '। 'তুমি আমাদের মত একজন মানুষ বৈ কিছুই নও। আমাদের ধারনা তুমি অবশ্যই মিথ্যাবাদীদের অনর্ভূক্ত'।'এক্ষনে যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোন টুকরা আমাদের উপরে ফেলে দাও'(শো'আরাঃ ১৮৫-১৮৭)।
শো'আইব (আঃ) তখন নিরাশ হয়ে প্রথমে কওম কে বললেন, 'আমরা আল্লাহর উপরে মিথ্যাআরোপকারী হয়ে যাব যদি আমরা তোমাদের ধর্মে ফিরে যাই। অথচ আল্লাহ আমাদেরকে তা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। ঐ ধর্মে ফিরে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে যদি আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সেটা চান। আমাদের পালনকর্তা স্বীয় জ্ঞান দ্বারা প্রত্যেক বস্তুকে বেষ্টন করে আছেন। (অতএব) আল্লাহর উপরেই আমরা ভরসা করলাম।
অতঃপর তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে বললেন, ' হে আমাদের পালনকর্তা ! আমাদের ও আমাদের কওমের মধ্যে তুমি যথার্থ ফয়সালা করে দাও। আর তুমিই তো শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী'(৮৯)।
তখন তাঁর কওমের নেতারা বলল, 'যদি তোমরা শোয়াইবের অনুসরণ কর, তবে তোমরা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে' (আ'রাফঃ ৮৯-৯০)।
অতঃপর শোয়াইব (আঃ) স্বীয় কওমের কাছ থেকে বিদায় নিলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,
'অনন্তর তিনি তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করলেন এবং বললেন, হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমদেরকে আমার প্রতিপালকের পয়গাম পৌঁছে দিয়েছি এবং তোমাদের উপদেশ দিয়েছি। এখন আমি কাফেরদের জন্য আর কিভাবে সহানুভূতি দেখাব'(আ'রাফঃ ৯৩) ।
'
শোয়াইব (আঃ) অধিকাংশ সময় ছালাত ও ইবাদতে নিমগ্ন থাকতেন বলে তাকে বিদ্রূপ করে কোন কোন মূর্খ নেতা এরুপ কথাও বলে ফেলে যে, তোমার ছালাত কি তোমাকে এসব আবোল-তাবোল কথা-বার্তা শিক্ষা দিচ্ছে?
কওমের লোকদের এসব বিদ্রুপবান ও রুঢ় মন্তব্য সমূহে বিচলিত না হয়ে অতীব ধৈর্য্য ও দরদের সাথে তিনি তাদের সম্বোধন করে বললেন,--
'হে আমার জাতি! তোমরা কি মনে কর, আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হ'তে সুস্পষ্ট দলীলের উপরে কায়েম থাকি, আর তিনি যদি নিজের তরফ থেকে আমাকে (দ্বীনি ও দুনিয়াবি) উত্তম রিযিক দান করে থাকেন, (তবে আমি কি তাঁর হুকুম অমান্য করতে পারি?)। আর আমি চাই না যে, আমি তোমাদেরকে যে বিষয়ে নিষেধ করি, পরে নিজেই সে কাজে লিপ্ত হই। আমি আমার সাধ্যমত তোমাদের সংশোধন চাই মাত্র। আর আমার কোন ক্ষমতা নেই আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত। আমি তাঁর উপরেই নির্ভর করি এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাই '(৮৮)। 'হে আমার জাতি! আমার প্রতি হঠকারিতা করে তোমরা নিজেদের উপরে নূহ্, হূদ বা সালেহ্ - এর কওমের মত আযাব ডেকে এনো না। আর লূতের কওমের ঘটনা তো তোমাদের থেকে দূরে নয়'(৮৯)।'তোমরা তোমাদের প্রভূর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তাঁর দিকেই ফিরে এস। নিশ্চয়ই আমার পালনকর্তা অতীব দয়ালু ও প্রেমময়' (৯০)। 'তারা বলল, হে শোয়াইব! তোমার অত শত কথা আমরা বুঝি না। তোমাকে তো আমাদের মধ্যকার একজন দূর্বল ব্যক্তি বলে আমরা মনে করি। যদি তোমার জাতি-গোষ্ঠীর লোকের না থাকত, তাহ'লে এতদিন আমরা তোমাকে পাথর মেরে চূর্ণ করে ফেলতাম। তুমি আমাদের উপরে মোটেই প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তি নও'(৯১)। 'শোয়াইব বলল, হে আমার কওম! আমার জ্ঞাতি-গোষ্ঠী কি তোমাদের নিকটে আল্লাহর চেয়ে অধিক ক্ষমতাশীল? অথচ তোমরা তাঁকে পরিত্যাগ করে পিছনে ফেলে রেখেছ? মনে রেখ তোমাদের সকল কার্যকলাপ আমার পালনকর্তার আয়ত্তাধীন'(৯২)। 'অতএব হে আমার জাতি! তোমরা তোমাদের স্থানে কাজ কর, আমিও কাজ করে যাই। অচিরেই তোমরা জানতে পারবে কার উপরে লজ্জাষ্কর আযাব নেমে আসে, আর কে মিথ্যাবাদী। তোমরা অপেক্ষায় থাক, আমিও অপেক্ষায় রইলাম' (হূদ-৮৮-৯৩)।
এর জবাবে তারা বলল যে, 'হে শোয়াইব! আমরা অবশ্যই তোমাকে ও তোমার সাথি ঈমানদারগনকে শহর থেকে বের করে দিব অথবা তোমরা আমাদের ধর্মে প্রত্যাবর্তন করবে'(আ'রাফ- ৮৮)।
তারা আরও বলল, 'নিঃসন্দেহে তুমি জাদুগ্রস্তদের অন্যতম '। 'তুমি আমাদের মত একজন মানুষ বৈ কিছুই নও। আমাদের ধারনা তুমি অবশ্যই মিথ্যাবাদীদের অনর্ভূক্ত'।'এক্ষনে যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবে আকাশের কোন টুকরা আমাদের উপরে ফেলে দাও'(শো'আরাঃ ১৮৫-১৮৭)।
শো'আইব (আঃ) তখন নিরাশ হয়ে প্রথমে কওম কে বললেন, 'আমরা আল্লাহর উপরে মিথ্যাআরোপকারী হয়ে যাব যদি আমরা তোমাদের ধর্মে ফিরে যাই। অথচ আল্লাহ আমাদেরকে তা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। ঐ ধর্মে ফিরে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, তবে যদি আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সেটা চান। আমাদের পালনকর্তা স্বীয় জ্ঞান দ্বারা প্রত্যেক বস্তুকে বেষ্টন করে আছেন। (অতএব) আল্লাহর উপরেই আমরা ভরসা করলাম।
অতঃপর তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে বললেন, ' হে আমাদের পালনকর্তা ! আমাদের ও আমাদের কওমের মধ্যে তুমি যথার্থ ফয়সালা করে দাও। আর তুমিই তো শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী'(৮৯)।
তখন তাঁর কওমের নেতারা বলল, 'যদি তোমরা শোয়াইবের অনুসরণ কর, তবে তোমরা নিশ্চিতভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে' (আ'রাফঃ ৮৯-৯০)।
অতঃপর শোয়াইব (আঃ) স্বীয় কওমের কাছ থেকে বিদায় নিলেন। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন,
'অনন্তর তিনি তাদের কাছ থেকে প্রস্থান করলেন এবং বললেন, হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমদেরকে আমার প্রতিপালকের পয়গাম পৌঁছে দিয়েছি এবং তোমাদের উপদেশ দিয়েছি। এখন আমি কাফেরদের জন্য আর কিভাবে সহানুভূতি দেখাব'(আ'রাফঃ ৯৩) ।
'
Comments
Post a Comment