Posts

Showing posts from January, 2018

হযরত শোয়াইব (আঃ) এর জীবনী (শেষ পর্ব)

Image
আহলে মাদইয়ানের উপর আপতিত গযবের বিবরণঃ হযরত শোয়াইব (আঃ) এর শত উপদেশ উপেক্ষা করে যখন কওমের লোকেরা তাদের অন্যায় কাজসমূহ চালিয়েই যেতে থাকল এবং নবী ও তাঁর অনুসারিদেরকে জনপদ থেকে বের করে দেওয়ার ও হত্যা করে ফেলার হুমকি দিল তখন হযরত শোয়াইব (আঃ) বিষয়টি আল্লাহর উপরে ছেড়ে দিলেন এবং কওমের লোকেদের বললেন , "তোমরা এখন আযাবের অপেক্ষায় থাক। আমিও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম।"(সূরা-হূদ-৯৩)। এদিকে আল্লাহ তায়ালা স্বীয় চিরন্তন বিধান অনুযায়ী শোয়াইব (আঃ) ও তাঁর ইমানদার সাথীগনকে উক্ত জনপদ হতে অন্যত্র নিরাপদে সরিয়ে নিলেন। অতঃপর জিব্‌রাইল (আঃ) এর এক গগনবিদারি নিনাদে অবাধ্য কওম এর সকলে ধ্বংস হয়ে গেল।  এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন, "অতঃপর যখন আমার আদেশ এসে গেল, তখন আমি শোয়াইব ও তাঁর ইমানদার সাথীগনকে নিজ অনুগ্রহে রক্ষা করলাম। আর পাপিষ্ঠদের উপর বিকট গর্জন আপতিত হ'ল। ফলে তারা নিজেদের ঘরে উপুড় হয়ে মরে পড়ে রইল । (তারা এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হ'ল) যেন তারা কখনোই সেখানে বসবাস করেনি । সাবধান! ছামূদ জাতির উপর অভিসম্পাদের ন্যায় মাদইয়ানবাসীর উপরেও অভিসম্পাদ"(সূরা-হূদ, ৯৪-৯৫)। যদিও তারা ...

হযরত শোয়াইব (আঃ) এর জীবনী (পর্ব-২)

Image
হযরত শোয়াইব (আঃ) এর নিঃস্বার্থ ও আন্তরিকতাপূর্ণ দাওয়াত তাঁর কওমের লোকদের হ্রদয়ে রেখাপাত করল না। তারা বরং আরো বিক্ষিপ্ত ও উচ্ছ্রংখল হয়ে তাঁর সুললিত বয়ান ও অপূর্ব চিত্তহারী বাগ্মীতার জবাবে পূর্ববর্তী ধ্বংসপ্রাপ্ত কওমের নেতাদের মত নবিকে প্রত্যাখ্যান করল এবং ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ ও তাচ্ছিল্য করে বলল, 'তোমার সালাত কি তোমাকে একথা শিখায় যে, আমরা আমাদের ঐসব উপাস্যের পূজা ছেড়ে দেই, আমাদের পূর্বপুরুষরা যুগ যুগ ধরে যাদের পূজা করে আসছে? আর আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত আমরা যা কিছু করে থাকি, তা পরিত্যাগ করি? তুমি তো একজন সহনশীল ও সৎ ব্যাক্তি' (সূরা-হুদ, আয়াত-৮৭)। অর্থ্যাৎ তুমি একজন জ্ঞানী ব্যাক্তি হয়ে একথা কিভাবে বলতে পার যে, আমরা আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে চলে আসা দেব-দেবীর পূজা পরিত্যাগ করি এবং আমাদের আয়-উপার্জনে ও রুজি-রোযগারে ইচ্ছামত চলা ছেড়ে দিই। আয়-ব্যয়ে কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম তা তোমার কাছ থেকে জেনে নিয়ে কাজ করতে হবে এটা কি কখনো সম্ভব হতে পারে? তাদের ধারনা মতে তাদের সকল কাজ চোখ বুজে সমর্থন করা ও তাতে বরকতের জন্য দোয়া করাই হ'ল সৎ ও ভাল মানুষদের কাজ। শোয়াইব (আঃ) অধিকাংশ সময় ছালাত ও ইবাদত...

হযরত শোয়াইব (আঃ) এর জীবনী (পর্ব-১)

Image
আল্লাহর গযবে ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রধান ৬টি জাতির মধ্যে ৫ম জাতি হ'ল 'আহলে মাদইয়ান' । 'মাদইয়ান' হল লূত সাগরের নিকটবর্তী সিরীয়া ও হিজাযের সীমান্তবর্তী একটি জনপদের নাম। যা অদ্যাবধী পূর্ব জর্ডানের সামুদ্রিক বন্দর 'মোআন' এর অদূরে বিদ্যমান রয়েছে। কুফরি করা ছাড়াও এই জনপদের লোকজন ব্যবসায়ের ওযন ও মাপে কম দিত, রাহাজানি ও লুটপাট করত। অন্যায় পথে জনগনের মালসম্পদ ভক্ষণ করত। ইয়াকুত হামাভী (রহঃ) বলেন, ইবরাহীম-পুত্র মাদইয়ানের নামে জনপদটি পরিচিত হয়েছে । হযরত শোয়াইব (আঃ) এদের প্রতি প্রেরিত হয়েছিল। ইনি হযরত মুসা (আঃ) এর শ্বশুর ছিলেন। কওমে লূত এর ধ্বংসের অনতিকাল পরে কওমে মাদইয়ানের প্রতি তিনি প্রেরিত হন । চমৎকার বাগ্মিতার কারণে তিনি 'খাতিবুল আম্বিয়া' নবিগনের মধ্যে সেরা বাগ্মী) নামে খ্যাত ছিলেন। আহলে মাদইয়ান কে পবিত্র কোরাআনে কোথাও কোথাও 'আছহাবুল আইকাহ্‌' বলা হয়েছে। যার অর্থ 'জঙ্গলের বাসিন্দাগণ'। এটা বলার কারণ এই যে, এই অবাধ্য জনগোষ্ঠী প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে নিজেদের বসতি ছেড়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিলে আল্লাহ তাদেরকে সেখানেই ধ্বংস করে দেন। এটাও বলা হয় যে, উক্ত জঙ্গলে আ...

দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় প্রয়োজনে কার কাছে সাহায্য চাইবেন।

Image
  আল্লাহ তাআলা বলেন --"হে মানুষ ! তোমরা সকলেই আল্লাহর মুখাপেক্ষী, আর আল্লাহ তিনি অমুখাপেক্ষী ও প্রশংসিত ।"--সূরা ফাতিরঃ ১৫ । ১। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা আল্লাহর নিকট তাঁর অনুগ্রহ চাও । কেননা তিনি তাঁর কাছে কোন কিছু চাওয়াকে ভালবাসেন ।" -তিরমিযি ।   মানুষের জন্মলগ্ন থেকে জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সকল মানুষ আল্লাহ তাআলার মুখাপেক্ষী। আল্লাহ তায়ালার রহমত ও দয়ায় দুনিয়াতে বেচে থাকে। আল্লাহর নবী (সা:) তাই  দুনিয়া ও আখিরাতের সমস্ত কিছু আল্লাহর কাছে চাইতে শিখিয়েছেন।   ২। হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "তোমাদের প্রত্যকেই যেন আপন রবের নিকট যাবতীয় প্রয়োজন ভিক্ষা করে, এমনকি যখন তার জুতার দোয়ালী ছিড়ে যায়, তাও ভিক্ষা করে, এমনকি নিমকও । " -তিরমিযি  । ৩। হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্নিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "অভাব অনটন যার কাছে পৌঁছে, সে যদি সমাধান মানুষের কাছে চায়, তা হলে তার এ অভাব দূর হবে না। আর যে ব্যাক্তি তাঁর অভাব সম্পর্কে আল্লাহর স্বরনাপন্ন হয়, তা হলে শীঘ্রই হোক আর বিলম্বেই হোক আল্লাহ তাকে রিযিক প্রদান করবেন-ই ।" -আবু...